আবারও পর্যটকদের আগমনে মুখরিত সাদা পাথর।
মকবুল হোসাইন:
প্রকৃতির অঢেল সৌন্দর্যের রূপ ছড়িয়ে আছে গোটা সিলেট জুড়ে। ছােট বড় পাহাড়ের সমারোহ আর তার বুকে গেঁথে থাকা চা বাগান, কমলা বাগানের ঘন বীথি, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির খেলা আর ঝিলমিল ঝিল প্রকৃতিকে দিয়েছে রূপমুগ্ধতা আর ঐশ্বর্যশালী লাবণ্যময়তা। অনুপম নৈসর্গিক দৃশ্যপট আর পর্যটকদের হৃদয় হরনকারী নীলাভ পাহাড়ের মন-মাতানো সাজ সিলেট কে করেছে অনন্য সাধারণ।
সিলেটের অন্যতম দৃষ্টিনন্দিত সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা হলাে কােম্পানীগঞ্জ। তার উপর দিয়ে বয়ে গেছে সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাময়ী ধলাই নদ। ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নদীটি অতিথি হয়ে ভােলাগঞ্জে ধলাই নাম ধারণ করে প্রবেশ করেছে, যা পর্যটকদের নিকট ভােলাগঞ্জ সাদা পাথর জিরাে পয়েন্ট নামে পরিচিতি লাভ করেছে। শুভ্র ফেনিল ঢেউ, নীল জলরাশি, সাদা পাথরের বিস্তৃত সমারোহ আর সবুজ পাহাড়ের মমতাময়ী চাহনি ভ্রমণ-পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে যেন আলিঙ্গনের বাসনা ব্যক্ত করে। সাদা পাথরের গায়ে স্বচ্ছ অশান্ত ঢেউয়ের আছড়ে পড়া কলকল ধ্বনি পর্যটকদের পুলকিত করে তুলে। পাথরের গায়ে যখন সূর্যের আলাে পড়ে তখন মনে হয় চারদিকে ছড়িয়ে আছে অজস্র মুক্তােদানা। নয়নাভিরাম পাথরের নিষ্পাপ ছড়াছড়ি আর দিগন্ত বিস্তর সবুজের সমারোহ উদাসীন, বিষন্ন ভগ্নহৃদয়ে এক স্বর্গীয় অনুভূতি জাগ্রত করে। সাদা পাথরের কনকনে ঠান্ডা পানি মুহূর্তেই শীতের তীব্রতার জানান দেয়। বিভিন্ন আকৃতির পাথর আর প্রবলবেগে ছুটে চলা ক্ষুদ্ধ পানির স্রোত যে কাউকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে ফেলে। হােয়াইট গোল্ড খ্যাত ভােলাগঞ্জের সাদা পাথরকে বাংলাদেশের বুকে একখণ্ড কাশ্মির বললেও হয়তাে নিতান্তই কম বলা হবে। করােনা মহামারির কারনে দীর্ঘ পাঁচ মাস প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে থাকা ভ্রমণ-পিপাসুদের জন্য আবারো উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে সাদা পাথর। যা দেশের পর্যটকদের জন্য একটি সুসংবাদ। ভ্রমণপিপাসু এসব মানুষদের জন্য সাদা পাথর পর্যটন স্পট পুরো বছরই খোলা রাখার দাবি জানান পর্যটকদের।