জানুয়ারি ২৬, ২০২১
৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস লিংক সহ

মূল পাঠ্যসূচি থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্ষিপ্ত এ সিলেবাসের আলোকেই শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম। তিন থেকে চার শ্রেণী কক্ষে পড়ালেখার পর এ সিলেবাসের আলোকেই পরীক্ষায় বসবে শিক্ষার্থীরা। এদিকে আইন সংশোধনের গেজেট প্রকাশ হলে গত এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিনক্ষন নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া সাধারণ শিক্ষা স্তরের মতো আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সকল মাদ্রাসা খোলার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার দু’দিনের মধ্যেই গতকাল সোমবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ হয়েছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস.এম আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দুদিন আগেই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলছেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে সপ্তাহে মাত্র একদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে শিক্ষার্থীদের। অবশ্য দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস হবে।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এখন শুধুমাত্র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস হবে। বাকিরা সপ্তাহে এক দিন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস করবে।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের (২০২১) যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে তারা প্রায় একটি বছর সরাসরি ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি। অনলাইন কিংবা টেলিভিশনে করেছে। এর একটি অংশ হয়তো একেবারেই বাইরে রয়ে গেছে। এসব কিছু বিবচেনায় নিয়ে আমরা এবারের এসএসসি ও এইচএসসির একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করেছি। তা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হচ্ছে। তার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেয়া হবে।

বলা হয়েছে, ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রেরিত ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। উক্ত পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের অবহিতকরণসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসসিটিবির তৈরি করা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস নিয়ে সোমবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে সভা হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চূড়ান্ত করা হয়। এরপর সেই সিলেবাস আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে dhakaeducationboard.gov.bd প্রকাশ করা হয়।

এনসিটিবির কর্মকর্তরা বলছেন, মোট ৩২টি বিষয়ের ওপর কর্মশালা হয়। সে বিষয়গুলো গড়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। সব বিষয়ে সমান বলা যাবে না। কারণ একেক বিষয়ে একের ধরনের পাঠ কমেছে। বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- হিসাববিজ্ঞান, কৃষি, চারুকারু, বাংলা প্রথম পত্র, বাংলা দ্বিতীয় পত্র, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, জীববিজ্ঞান, বৌদ্ধধর্ম, ব্যবসা উদ্যোগ, ক্যারিয়ার এডুকেশন, রসায়ন, খ্রিস্টান ধর্ম, অর্থনীতি, ইংরেজি প্রথম পত্র, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র, ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্স, ভূগোল ও পরিবেশ, উচ্চতর গণিত, হিন্দু ধর্ম, ইতিহাস, গার্হস্থ্যবিজ্ঞান, আইসিটি, ইসলাম ও আদর্শ শিক্ষা, গণিত, শারীরিক শিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান বিষয় রয়েছে।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ হয়ে আগামী জুনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজন করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।

সিলেবাসের বিষয়ে জানা গেছে, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করার লক্ষ্যে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক-কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে এনসিটিবি বেশ কয়েকটি কর্মশালার আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষক, বাচাই করা জেলা শিক্ষা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের রাখা হয়। তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় অধ্যায়গুলো রেখে একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি সিলেবাস শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় এনসিটিবি।

গেজেট প্রকাশের পর ঠিক হবে এইচএসসির ফল প্রকাশের তারিখ

পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশে আজ কালের মধ্যে প্রকাশ হতে পারে আইন সংশোধনের গেজেট প্রকাশ। আইন সংশোধনের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর এ পরীক্ষার ফল ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম সোমবার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আইন সংশোধনের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর আমরা ফল প্রকাশের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। মন্ত্রণালয় যেদিন অনুমোদন করবে, সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।

তবে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের ফলাফলের ভিত্তিতে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *