সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বরমসিদ্দিপুর গ্রামে তৈয়ব আলী ও হেলাল আহমদের কাছে জিম্মি শ্রমিক ব্যবসায়ীরা। তারা বিজিবির লাইনম্যান পরিচয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের চাদা নিয়ে থাকে। তবে বিজিবি তা অস্বীকার করেছে। তাদের এই চাঁদাবাজিতে বহুদিন থেকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীসহ শ্রমিকরা।
জানাযায়, কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বরমসিদ্দিপুর এলাকায় বড়পুঞ্জি বাজারের ১২৫৫ নং পিলারের অভ্যন্তরে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করে পাথর উত্তোলনে সহায়তা করে কালাইরাগ বিজিবি ক্যাম্পের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা উত্তোলন করছেন তৈয়ব আলী ও হেলাল আহমদ।
স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, চলতি বছরের ঈদ উল আযহার পূর্বে থেকে ঐ এলাকায় কালাইরাগ বিজিবিদের লাইনম্যান পরিচয়ে একাধিক মাদক মামলার আসামী বরমসিদ্দিপুর গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে তৈয়ব আলী ও আব্দুল করিমের ছেলে হেলাল আহমদের যৌথ সহযোগীতায় রফাদফার মাধ্যমে ভারতে ঢুকে তাদের জীবন বাজি রেখে পাথর আনেন শ্রমিকরা। আর এই পাথর থেকে শ্রমিকরা কথিত লাইনম্যানকে দিতে হয় গাড়ি প্রতি ৪ হাজার টাকা। এ ভাবে চলছে বহুদিন। কিন্তু এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হেলাল ও তৈয়ব আলী বর্তমানে গাড়ি প্রতি ৬ হাজার টাকা দাবি করে বসেন। এতে শ্রমিকরা কর্ণপাত না করে তাদের কাছে গাড়ি প্রতি ৪ হাজার টাকা দিলে তারা (লাইনম্যান) টাকা না নিয়ে কালাইরাগ বিজিবিদের দিয়ে পাথর জব্দ করে ফেলেন।
এই পাথর ২নং ওয়ার্ড সদস্য ফখরু মিয়া বিজিবির কাছ থেকে রাখেন। এর জের ধরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় শ্রমিক ব্যবসায়ীরা লাইনম্যানদের বাড়ি ঘেরাও করেন। পরে ওই দিন পুনরায় ওয়ার্ড সদস্য ফখরু মেম্বার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে এলাকাবাসীকে শান্ত করেন। ওই দিন রাতেই বরমসিদ্দিপুর গ্রামে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য ও প্রমানিত হলে স্থানীয় মুরব্বিরা সিদ্ধান্ত নেন, বিজিবির নামে কেউ টাকা উত্তোলন করতে পারবে না। এবং কোন মানুষ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবেনা। স্থানীয় অনেকেই জানান, একাধিক মাদক মামলার আসামী তৈয়ব আলী বিজিবির লাইনম্যান পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে অনেক জায়গা জমির মালিকসহ বিলাসবহুল বাড়ির মালিক বনে গেছেন। তারা আরো বলেন, বিজিবির লাইনম্যানের পরিচয় দিয়ে তারা ভারত থেকে মাদক, অবৈধ গাড়ি, কাঁচামাল, স্বর্ণ প্রাচার করে থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মাদকের বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।
উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরু মিয়া জানান, বিষয়টি সম্পুর্ন সঠিক। আমি না থাকলে পাথরের বিষয়টি নিয়ে মার্ডার হতো। তবে উত্তেজিত পরিবেশ দেখে স্থানীয় ভাবে বসে এলাকার মুরব্বিগণসহ বিষয়টি মিমাংসা করেছি। এবং তাদেরকে সাধারণ শাস্তিও দিয়েছি। স্বীকার নিয়েছি যাতে তারা আর কখনো বিজিবির নামে টাকা উত্তোলন না করে।
কালাইরাগ সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার নুর সুলাইমান ভারত থেকে আনা পাথর এবং টাকা উত্তোলন বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হেলাল ও তৈয়ব আলী নামের কাউকে তিনি চিনেন না।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাসাদেক ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম জানান, আনিত এমন অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। তার পরেও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব, আর যদি বিজিবির নামে কেউ চাঁদা দাবি করে তাহলে তাকে ধরে বিজিবির কাছে সোপর্দ করবেন। বিজিবি তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।