খবর ডেক্সঃ- গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীর গ্রামের উনাই হাওর যেন এক দিগন্তবিস্তৃত সবুজের সমারোহ। শুধু উনাই নয়, মুক্ত আকাশের নীচে দু’শত বিঘারও বেশী জমিতে গ্রামের মানুষের দিবারাত্রী শ্রমের বিনিময়ে শীতকালীন নানা সবজি আর ফসলের সবুজ হাসিতে হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই হাওরকে ঘিরে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনছে মানুষ। এখানে সরিষা, গম, ভূট্টা, ফরাস, আলু বেগুন, টমেটো, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, তরমুজ, শশা কোন কিছুরই কমতি নেই।
‘কৃষি দিবানিশি’ নামে একটি প্রজেক্ট পরিচালনা করছেন শিক্ষক পরিতোষ চন্দ্র দেব। তার আওতায় রয়েছে ষাট বিঘা জমিতে শীতকালীন নানা সবজিসহ গম, বাদাম, নাগামরিচ, সরিষা, ধনিয়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও সীমের বিশাল বাগান। এখানে ইতিমধ্যে ৬ লক্ষ টাকারও বেশী বিনিয়োগ করেছেন তিনি। শশা লাউ করোলা বেগুন লক্ষাধিক টাকার বিক্রিও হয়েছে। যদিও আশ্বিনে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি ও উৎপাদন পিছিয়ে দিয়ে গেছে। আধুনিক কৃষি ক্ষেত্রে দক্ষ এই শিক্ষককে কৃষি উৎপাদনে এলাকার মডেল হিসাবে দেখছেন কৃষকরা। তাকে অনুকরণ করে উনাই হাওরে নেই আজ পতিত জমি।
উনাই হাওরে আলীর গ্রামের দু’শতাধিক পরিবার এখন উৎপাদনে নিমগ্ন। প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে পূরো মওসুমে এই মাঠ থেকে অর্ধ কোটি টাকার বেশী বিক্রি আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরিতোষ দেব। এছাড়া গ্রামবাসির পরিশ্রমে এই হাওর দিয়েছে সবুজ সোনার সন্ধান। ফসল উৎপাদনের জন্য মানুষের শীতের হিমেল রাত কাটে ফসলের মাঠে। পরিবার পরিজনের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অর্জনে দেশে উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলছে বিরামহীন প্রচেষ্টা। তাদের আশা রবি মওসুম ও বোরে ফসলের মাধ্যমে দু’কোটি টাকার বাড়তি উৎপাদন হবে যদি আল্লাহ সহায় থাকেন। আর কৃষিতে সব ধরনের পরামর্শ সহায়তা দিচ্ছেন সরকারের কৃষিবিভাগ।
কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলীসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ দেখছেন, দিচ্ছেন পরামর্শ। বৈশ্বিক করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিলগ্নে শ্রমিক কৃষক সবাই ঝুকে পড়েছেন কৃষিতে। উনাই হাওরের সবুজ সোনার সন্ধানে গ্রামবাসি কৃষক শ্রমিক এগিয়ে এলেও তা উত্তোলনে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেচ, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা স্বাভাবিক হলে আলীর গ্রামের এই উনাই হাওর দেশের খাদ্য উৎপাদনে রাখবে এক অনন্য অবদান। সবুজ বিপ্লবে সূচিত হবে আরো এক নবদিগন্তের।