এস.এ ডিউক ভূঁইয়া, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
জুলাই ৮, ২০২২
১২:৫১ অপরাহ্ণ
তিতাসে ৩০টি গ্রামের মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা

তিতাসে ৩০টি গ্রামের মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা

কুমিল্লার তিতাসের গোমতী-কাঁঠালিয়া নদীর সংযোগ মাইটা নদীতে পারাপারের সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে ৩০ গ্রামবাসী। পার হওয়ার জন্য ৩০ গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষের এক মাত্র ভরসা নৌকা।

জানা যায়, প্রতিদিনই তিতাস ও দাউদকান্দি উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করেন।গোমতী-কাঁঠালিয়া নদীর সংযোগ মাটিয়া নদীর দুই তীরের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বছরের পর বছর নৌকায় দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এই নদীতে সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজন বলে দাবি জানান এই অঞ্চলের মানুষেরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গোমতী- কাঁঠালিয়া নদীর সংযোগ মাটিয়া নদীটি তিতাস ও দাউদকান্দি উপজেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত হওয়ায় দুই উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষের পারাপারের এক মাত্র ভরসা হলো নৌকা। এই নদীর পূর্ব পাশে তিতাস উপজেলার বালুয়াকান্দি, কাকিয়াখালি, শাহবৃদ্ধি, মজিদপুর, আলীর গাঁও, কড়িকান্দি, কলাকান্দি, একলারামপুর, শাহপুর, শোলাকান্দি, লালপুর, ভাটিপাড়া, দুধঘাটা, দড়িগাঁও, মোহনপুর, ৫আটি আর দাউদকান্দি অংশে বারজা, বাহেরচর, হাসনাবাদ, চাউরারচর, নন্দিরচর, গংগারদ, বালুরচরসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দাদের ছোট মাটিয়া (মাইট্টা) নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা নৌকা। তবে শুকনো মৌসুমে বাঁশেরসাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে চলাচল করে মানুষজন। দেশে বর্তমানে ডিজিটাল উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত হলেও একটি ব্রিজের অভাবে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এই জনপদের জীবনমান। ফলে স্থানীয় কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বলেও জানা গেছে। এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় তাদের মধ্যে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি।যার কারণে প্রতিনিয়তই থমকে যাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের অর্থনৈতিক চাকা।প্রতিদিনই নৌকায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ চলাচল করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াও স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা নৌকায় পারাপার হচ্ছেন।

এব্যাপারে দাউদকান্দি উপজেলার বাজরা গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার শরীফ মিয়া বলেন, ভাজরা এস ই এস পি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আইয়ুব আলী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় ওপার থেকে এপারে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রীরা আসছে। এই নদীতে একটা সেতু নির্মাণ করে দিলে মানুষের অনেক উপকার হতো।

বালুয়াকান্দি গ্রামের সাবেক মেম্বার আবুল কাসেম জানান, মাটিয়া নদীতে একটি ব্রিজ না থাকায় আমাদের এলাকার মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে, বর্ষা মৌসুমে নৌকায় ও শুকনো মৌসুমে বাঁশেরসাঁকোর ওপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি মাটিয়া নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিলে মানুষের বিরাট উপকার হবে।

বালুয়াকান্দি গ্রামের মুদিদোকানী হক মিয়া জানান,এই নদীর ওপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ আসা যাওয়া করে,এর মধ্যে ৪০-৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীও নৌকায় চলাচল করে।তবে শুকনো মৌসুমে বাঁশেরসাঁকোর ওপর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পরালেও বর্ষ মৌসুমে এই নদীর ওপর দিয়ে মানুষের চলাচলে বিরাট অসুবিধা হয়।তিতাস উপজেলার মধ্যে এক মাত্র এই নদীর ওপরই কোন ব্রিজ নেই। আমরা শুকনো মৌসুমে মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে এই নদীর ওপর একটি বাঁশেরসাঁকো নির্মাণ করি। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এই নদীতে পানি বেড়ে যায়, এজন্য এই নদীতে একটা নৌকা রাখি, আর সেই নৌকা দিয়ে ২০ টাকা করে মানুষ আসা যাওয়া করে। একটা ব্রিজের অভাবে মানুষ ১০ বছর যাবৎ অনেক কষ্ট করে এই নদীর ওপর দিয়ে আসা যাওয়া করছে।

এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক বলেন, আমি তো সরজমিন গিয়েছিলাম, এই মূহুর্তে এই নদীতে ব্রীজ নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেই, সামনে সুযোগ পেলে এই নদীতে ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিবো।

শেয়ার করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *