নভেম্বর ২৫, ২০২০
১:৩০ অপরাহ্ণ

প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করে বিয়ে করেন মামুন

খবর ডেক্সঃ- নগরীর কাজীটুলা এলাকায় নববধু সৈয়দা তামান্না হত্যাকান্ডের মুল হোতা স্বামী আল মামুনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে, তার ভগ্নিপতিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। অন্যদিকে সৈয়দা তামান্নার সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছে পরিবার। মামলার বাদী নিহতের ভাই অভিযোগ করেছেন, পলাতক আল মামুন এর আগেও একটি বিয়ে করেছিলো, তার স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও রয়েছে।

কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা জানান, তামান্নার পরিবারের পক্ষে তার ভাই সৈয়দ আনোয়ার হোসেন রাজা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা (মামলা নং ৫৮) দায়ের করে। মামলায় নিহতের স্বামী মো. আল মামুনসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় মামুন ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- এমরান, পারভীন, মাহবুব সরকার, বিলকিস ও শাহনাজ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

ওসি মোহাম্মদ সেলিম মিঞা আরো জানান, পুলিশ মামলার প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ এজাহার নামীয় আসামি এমরান (৩০) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। নগরীর সোবহানীঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এমরান বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার চরহোগলা (পাতিয়া চর উত্তর) গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। সে এমরান হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত আল মামুনের বোন জামাই। এমরানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অন্যদিকে তামান্নার সাথে বিয়ের আগেও আরেকটি বিয়ে করেছিলেন মামুন। মামুনের বিরুদ্ধে আগের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাও রয়েছে। আগের স্ত্রীর ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে তার। তবে নিহত তামান্নার পরিবারের তা জানা ছিলো না।

এদিকে, তামান্নাকে বিয়ে করার সময় যে আইডি কার্ড প্রদর্শন করেছিলেন মামুন সেটি ভূয়া বলে নববধূর পরিবারের অভিযোগ। মো. আল মামুনের জন্মস্থান বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার হোগলারচরে। তবে তার ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানায় রয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বারুতখানা এলাকার নাম। আইডি কার্ডে উল্লেখ রয়েছে মামুন বারুতখানা এলাকার আবুল কাশেম সরদার ৮ ও আম্বিয়া বেগমের ছেলে। আল মামুন নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আল-মারজান শপিং সেন্টারের ঐশি ফেব্রিক্স নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।

অপরদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তামান্না ও আল মামুনের বিয়ের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন শাহনাজ পারভিন নামের মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স এর এক কর্মকর্তা। ওই মহিলা মামুনকে তার চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন এবং তামান্নার পরিবারে বিয়ের জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকেন। বিয়ের সময় টাকা দিয়েও শাহনাজ পারভিন সাহায্য করেন তামান্নার পরিবারকে। অভিযোগ রয়েছে, এ বিয়েতে তামান্নার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যের অসম্মতি ছিলো। কিন্তু শাহনাজ পারভিনের পীড়াপিড়িতেই এ বিয়েটি হয়। শাহনাজ এখন গা ঢাকা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরের দিকে নগরীর কাজীটুলার অন্তরঙ্গ ৪ নম্বর বাসার তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে গৃহবধূ সৈয়দা তামান্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলায় রক্ত জমাট বাধা ছিলো। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে ব্যবসায়ী আল মামুনের সাথে তামান্নার বিয়ে হয়। পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী এবং রোববার রাতের কোনো এক সময় তামান্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলেও ধারণা পুলিশের। নিহত সৈয়দা তামান্না বেগম-এর বাড়ি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামে। তবে মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার এমসি একাডেমি সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

শেয়ার করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *