খবর ডেক্সঃ-
আগস্ট ২৮, ২০২১
৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ
প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম

প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম

বছর ঘুরে আবারও বন্যার কবলে দেশ। বেড়ে চলেছে নদ-নদীর পানি। ডুবছে নিম্নাঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দী লাখো মানুষ।

এক দিনের ব্যবধানে গতকাল সকাল ৯টায় ১০৯টি পর্যবেক্ষণাধীন পানিসমতল স্টেশনের ৬১টিতে পানি বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে দেশের আটটি প্রধান নদ-নদীর পানি ১২টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী গতকাল সকালে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পানিসমতল স্টেশনে, ধরলার পানি কুড়িগ্রামে, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারীতে, যমুনার পানি সারিয়াকান্দি, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ ও আরিচায়, আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী স্টেশনে, ধলেশ্বরীর পানি এলাসিন স্টেশনে, পদ্মার পানি গোয়ালন্দ ও সুরেশ্বর স্টেশনে এবং মেঘনার পানি চাঁদপুরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর মধ্যে পদ্মার পানি গোয়ালন্দে বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৪৫ ও সুরেশ্বরে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আত্রাইয়ের পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ও ধলেশ্বরীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানিসমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। পদ্মার পানিসমতল স্থিতিশীল থাকলেও আজ বাড়তে পারে।

গঙ্গা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। তবে আজ কুড়িগ্রাম, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও তথ্য- বগুড়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ : যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীতীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় যমুনার পানি মথুরা পানিসমতল স্টেশনে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল, চালুয়াবাড়ী, সারিয়াকান্দি সদর, হাটশেরপুর, চন্দনবাইশার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় নদীতীরবর্তী মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে। অনেকেই উঠেছে আশ্রয় কেন্দ্রে। সিরাজগঞ্জে ঘরে কোমরপানি: যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। ঘরে কোমরপানি। তলিয়ে গেছে চৌকি, চুলা, টিউবওয়েল, টয়লেট।
চরম কষ্টে দিন কাটছে দুর্গত এলাকার মানুষের। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রামে পানিবন্দী ২০ হাজার মানুষ : কয়েকদিনের উজানের ঢল ও অবিরাম বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। গতকাল বিকাল ৩টায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। নদ-নদীর তীরের নিম্নাঞ্চলে অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলার ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচরের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। গ্রামের কাঁচা-পাকা সড়ক ডুবে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষ। অনেকেই গবাদি পশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। ডুবে গেছে রোপা আমন ধান ও শাকসবজির খেত।
এদিকে পদ্মার রাজবাড়ী অংশে পানি বাড়ায় নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভিটেবাড়িতে পানি ওঠায় বাসিন্দাদের মধ্যে সাপ ও ডাকাত আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গবাদি পশুর খাদ্যসংকট চলছে।

গাজীপুরের নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়তে শুরু করায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সিটির কাশিমপুর নামা বাজার, কালিয়াকৈর, কড্ডা, বাইমাইল নদের পার, মজলিশপুর, লাঠিভাঙ্গা, কাতলাখালী, মিরের গাঁওসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় গত তিন দিনে ২-৩ ফুট পানি বেড়েছে।

শেয়ার করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *