বসন্ত এসে গেছে, শিল্পীর সুরমাধুর্য আর শিমুল-পলাশ-কৃষ্ণচূড়ার রঙে রাঙানো বসন্তের প্রথম দিন আজ। একইসঙ্গে আজ প্রেমিক হৃদয় উদ্বেলিত ভালোবাসা দিবসের ছন্দে। এমন দিনে সৌন্দর্যের রানি ফুল ছাড়া কি চলে? চলে না। সেই মোহনীয় ফুল চাষ করে ভবিষ্যতের সুন্দর স্বপ্ন বুনছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা।
দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলায় এবারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করেছেন কৃষকরা। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বেশকিছু জাতের ফুল উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে তাদের উৎপাদিত ফুল। ঘরে আসছে মুনাফার অর্থ।
জেলার সদর উপজেলার নারগুন ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকজন উদ্যোক্তা এরই মধ্যে নিজেদের সফল ফুলচাষি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এদিকে এই ফুল চাষকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে অনেকের কর্মসংস্থান।
জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, নার্সারি পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে কিছু ফুল চাষ ও চারা উৎপাদন করে জেলার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। ফুল চাষে সময় লাগছে কম, লাভ সে তুলনায় বেশি। তাই অন্যান্য ফসলের চেয়ে এখানকার কৃষকরা এখন ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
সফল ফুলচাষিদের দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। নিচ্ছেন সফল উদ্যোক্তাদের কাছে পরামর্শ। এদিকে বাহারি রঙের নানা জাতের ফুটন্ত ফুল বাগান বা ফুলের ক্ষেত দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন অনেকে। তাদের মধ্যে যেমন রয়েছেন আগ্রহী চাষি, তেমনি রয়েছেন ফুলপ্রেমী।
শহর থেকে ফুলবাগান দেখতে আসা সরিফুল ইসলাম বলেন, শহরের পাশে এত সুন্দর ও বড় ফুলের বাগান দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। ফুলের গন্ধে মন দোলা দেয়। অনেক সুন্দর এসব বাগান। মনভরে ছবি তুলেছি বাগানে।
ফুলচাষি নাসিমুল আলম জানান, গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন জাতের উন্নত মানের ফুল চাষ করেন চাষিরা। স্থানীয় শ্রমিকদের যত্নে ও ভালোবাসায় চাষকৃত চোখ জুড়ানো এসব ফুল দ্রুত বেড়ে উঠছে। সরবরাহ করা হচ্ছে বাজারে। সামাজিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের কদর থাকায় একটা সময় অন্যান্য জেলা থেকে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করা হতো। এখন এ জেলাতে উৎপাদন হচ্ছে নানা জাতের ফুল।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কৃষকরা ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
তিনি আরো বলেন, ফুলচাষিদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষকদের ফুল চাষে উদ্ধুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ জেলায় ফুল চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন লাভবান হবেন কৃষক, অন্যদিকে কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা।