ডিসেম্বর ৩, ২০২০
৩:১১ অপরাহ্ণ

বদলগাঁছীতে তিন ফসলী কৃষি জমি নষ্ট করে, ভাটায় রমরমা মাটির ব্যবসা

বদলগাঁছী(নওগাঁ প্রতিনিধি):- নওগাঁর বদলগাঁছীতে চলছে দুর্বৃত্তদের তিন ফসলী কৃষি জমির মাটি কাঁটার মহা উৎসব। মধ্যরাতে চলছে রমরমা অবৈধ মাটি ব্যবসা ও নেশাপান। রাতের আধারে স্কেভেটর দিয়ে কৃষি জমিগুলো ডোবা-নালা-গর্ত করে শতশত ট্রাকে মাটি নিয়ে ভাটায় বিক্রি করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। উপজেলার মুথরাাপুর ইউনিয়নের সাগরপুরে কসবা, এলাকা, মিঠাপুর এলাকাজুড়ে জগপাড়া, খাদাইল, এলাকায় চলছে এসব কর্মকান্ড।

তবে এসব সকলে দেখলেও চোখে পড়েনা কর্তাদের। শতশত ট্রাকের শব্দে জনগনের ঘুম ভাঙ্গলেও ঘুম ভাংগেনাা প্রশাসনের। এমন অবস্থায় দুর্বৃত্তদের অভয়ারন্য হওয়ায় মধ্যরাতেও গ্রামের রাস্তাঘাট দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কোন গ্রামীন জনপদ।

এমন অবস্থায় এ এলাকার মাটি ও মানুষ এখন ভুমি দস্যুদের কবলে। আর দুর্বৃত্তদের কুট কৌশল ও অর্থলোভ এ এলাকার কৃষি উর্বর সোনা ফসলী জমিগুলো একের পর এক পরিনত হচ্ছে গর্ত, ডোবা, নালা আর জলাশয়ে। বিলুপ্ত হচ্ছে কৃষি পণ্য উৎপাদন। শুধু তাই নয়, প্রতিরাতে শতশত ট্রাকের চাপে কোটি কোটি টাকায় নির্মিত উপজেলার পাকা সড়কগুলো এখন পরিণত হয়েছে কাঁচা সড়কে। কিন্তু এসব দেখবে কে ? সবাই যেন দায়সাড়া। দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ নেই সংশ্লিষ্টদের।

অনুসন্ধানে দেখাগেছে, বদলগাঁছী, উপজেলার মোট আবাদী জমির পরিমান ৪২১২৩ হেক্টর। এসব ভুমি এতটাই কৃষি উর্বর যে সারাবছর এসব জমিতে ধান, গম, ভুট্রা, আলু, বেগুন, শীম, পেঁয়াজ, মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পটল, পুঁইশাক, লালশাক, ধনে পাতা সহ বিভিন্ন তরকারী চাষ হয়। শুধু তাই নয়, এসব এলাকার কৃষি পণ্য নওগাঁর খাদ্য চাহিদা পুরন করার পরও প্রতিদিন শতশত ট্রাক ঢাকা চট্রগ্রাম সহ বিভিন্ন অঞ্চলে যায় এবং দেশের খাদ্য চাহিদা পুরন করে।

অথচ ভুমি দস্যুরা শুধু নিজের স্বার্থে অর্থলোভে এই কৃষি উর্বর জমির মালিকদের টাকার লোভ দেখিয়ে ফসলের চেয়ে জমির মাটি বিক্রি করে পুকুর করে মাছচাষে উৎসাহী করছে। কখনও মাটি বিক্রির তথ্য গোপন রেখে কৃষকদের চাপের মধ্যে রেখে পুকুর তৈরীর মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। তাই কৃষক দুর্বৃত্তদের ভয়ে ও টাকার লোভে কৃষি উর্বর জমির মাটি বিক্রি করছে।

অপরদিকে ভুমিদস্যুরা এতটাই গভীর করে মাটি উঠিয়ে নিচ্ছে যে সোনার ফসলী কৃষি উর্বর জমিগুলো একের পর এক পরিনত হচ্ছে গর্ত, ডোবা, পুকুর আর জলাশয়ে। দেখে মনে হয়, দেশে ভুমি সংরক্ষন আইন বলে কিছু নেই। দেখারও কেউ নেই। ফলে উপজেলার বিপুল পরিমান জমিতে আর কৃষি পণ্য উৎপাদন হচ্ছেনা। বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক কৃষিজমি। তথাপি দৃষ্টিতে আসছেনা প্রশাসনের। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই অ-কৃষিতে পরিণত হবে এ এলাকা।

এদিকে প্রতিরাতে দুর্বৃত্তরা শতশত ট্রাকে এভাবে মাটি নিয়ে ভাটায় বিক্রি করলেও কেন ব্যাবস্থা নেই।এমনি অবস্থায় বটবৃক্ষের সুশীতল ছায়ায় রয়েছে দুর্বৃত্তরা। নির্ভয়ে চালিয়ে যাচ্ছে কর্মকান্ড। তাই রাতের আধারে কৃষিজমির মাটি নিয়ে শতশত ট্রাক চলাচল ও রমরমা ব্যবসার দৃশ্য সকলের চোখে পড়লেও প্রশাসনের কেন চোখে পড়েনা! এমন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার সাধারন জনগন।

শেয়ার করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *