সিরাজুল ইসলাম
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জ্বালানী গ্যাসের আবাসিক সংযোগ না থাকায় এই অঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণভাবে এলপি গ্যাস এর উপর নির্ভরশীল। এলাকার বাজার গুলোতে বিভিন্ন কোম্পানীর এলপিজি সিলিন্ডার (১২ কেজি) সাধারণত ৯০০-১১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে এলপি (লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম) গ্যাস এর দাম কমিয়েছে বাংলাদেশে এলপি গ্যাস সরবরাহকারীদের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান “বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন)”। তাদের নির্ধারণকৃত ১২ কেজি’র সিলিন্ডারের বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা/সিলিন্ডার। এই মূল্য কেবল সরকারী এলপিজি’র (পদ্মা, মেঘনা) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু বাজারের অন্যান্য গ্যাস সিলিন্ডারের দাম প্রায় অপরিবর্তিত (ক্ষেত্রবিশেষে কিছুটা কমেছে) রয়েছে।
কিছুদিন যাবৎ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলপি গ্যাস এর দাম কমার খবরটি প্রচারিত হয়ে আসছে। কিন্তু কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজার পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ১২ কেজির প্রতিটি সিলিন্ডার এখনো ৮০০-৯৫০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে । বাজারে সিলিন্ডারের মূল্য প্রায় অপরিবর্তিত থাকায় সাধারণ ক্রেতারা দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, দাম নির্ধারিত হয়েছে শুধুমাত্র সরকারী (পদ্মা, মেঘনা) গ্যাস সিলিন্ডারের। মূলত, সরকারী এবং বেসরকারী এলপিজি’র তফাৎ বুঝতে না পারায় ক্রেতাসাধারণ বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশে বর্তমান বাৎসরিক এলপি গ্যাস এর চাহিদা প্রায় ১০ লাখ টন। কিন্তু সরকারী বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৬ হাজার টন। যা মোট দেশীয় চাহিদার ২-৩ শতাংশ। বাকি ৯৭-৯৮ শতাংশ চাহিদা পুরণ করে আসছে বেসরকারী কোম্পানীগুলো। আর বেসরকারী কোম্পানীগুলো যেহেতু শতভাগ আমদানী নির্ভর, তাই তারা সরকারী গ্যাসের সমমুল্যে গ্যাস বাজারজাত করতে পারছেনা। মুলত এই কারণেই বাজারে সরকারী এবং বেসরকারী এলপি গ্যাস এর দামের তারতম্য দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া এলপি গ্যাস এর মূল্য নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট কোন সরকারী নীতিমালা না থাকায় বেসরকারী কোন সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারণ সম্ভব হচ্ছেনা। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় এনে সবধরণের গ্যাস সিলিন্ডারের গায়ে “সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয়মুল্য” লিখার ব্যবস্থা থাকলে এইধরনের দ্বিধায় পড়তে হবেনা ক্রেতাদের।তাই এলপি গ্যাস এর মুল্য নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।