উপসম্পাদকীয়
মকবুল হোসাইন
করােনা মহামারির আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ বৈশ্বিক অর্থনীতি।বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও বৃদ্ধি হচ্ছে বেকারত্বের হুমকি। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলমান লকডাউনও শিথিল করা হয়েছে দেশে। সবকিছু যেন নিজস্ব গতিতে চলছে। মানুষ বসে নেই। রাস্তাঘাট, বাজার, দোকানপাট, গরুর হাট, পরিবহন ব্যবস্হা অর্থাৎ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চলছে তার আপন গতিতে।
কিন্তু সবকিছু চললেও তালাবদ্ধ হয়ে আছে দেশের সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাবখানা এমন যে সবকিছু অবাধে চললেও কিছু হবেনা শুধু স্কুল কলেজ খুললেই দেশে মহামারির প্রকট শুরু হবে। শিশুরা স্কুলে কলেজে মেলামেশা করলে মহামারি ছড়িয়ে পড়বে এবং এর ফলে তাদের পরিবার পরিজনদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটবে। আসলেই কি তাই? কিন্তু শিশুদের মা বাবা ঠিকই তাদের কর্ম সংস্থানে যাচ্ছে! মানুষের সাথে মেলামেশা করছে! রােজ বাসায় ফিরছে কিন্তু আদৌ কি ভাইরাসের প্রাদূ্র্ভাব তাদের পরিবারে ছড়িয়ে পড়ছে? গরুর হাট বাজার আর সুপার মার্কেটে গেলেই বুঝা যায় মানুষ কতটা সামাজিক দূরত্ব মানছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এমনটাই ঘোষণা করেছে প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্হা ব্যহত হচ্ছে। এইচ এস সি ও সমমানের পরীক্ষা সহ সকল ধরনের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে। দেশে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি উপশম করার লক্ষ্যে দূরশিক্ষনের ব্যবস্হাও করা হচ্ছে। দেশে প্রায় ৪ কােটিরও উপড়ে শিক্ষার্থী আছে যা মােট জনসংখ্যার অনেক বড় একটা অংশ।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সবকিছু ঠিকঠাক মতাে চলছে সেটা আসলে কতটুকু যুক্তিসঙ্গত ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন? এবং এটা বাংলাদেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশে কেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারে সেটা চিন্তার বিষয়।
আবার পাঠদান না করলেও সরকার পুরো বেতন দিচ্ছে শিক্ষকদের। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কেউ পুষিয়ে দিচ্ছে না। মাস্ক লাগিয়ে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে যখন সবকিছুই চলছে তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে?শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যায় না? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ রাখা নিঃসন্দেহে অদূরদর্শিতার পরিচয়। সাড়ে ৪ কােটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলাে গঠনমূলক সিদ্ধান্তের অভাবে ব্যহত হচ্ছে। পরিশেষে বলতে চাই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও ক্ষতির পরিমাণ টা অনেক বেশি।