আজকে খবর: ইউনিয়ন দলনেত্রীকে নিয়মিত ডিউটি দেবেন। তবে যেতে হবে হারুনুর রশিদের একান্ত রুমে। ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকারও বেশি আত্মসাৎ, পূজা ও নির্বাচনী ডিউটিতে পিসি ও এপিসিকে সঠিক রেখে বহিরাগতদের দিয়ে ডিউটি কারানো, সিসিতে ১২ জন লেখা থাকলেও ৭/৮ জন দিয়ে ডিউটি করানো, ব্যাংক ও বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক সহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ডিউটিরত আনসারদের ছুটির কাগজে স্বাক্ষর করতে হলে দিতে হয় বকশিশ। দরিদ্র আনসার সদস্যদের ডিউটি পেতে হলে খাওয়াতে হয় বাড়ির রান্না করা খাবার। ইউনিয়ন দলনেত্রী হিসাবে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে অযথা মেয়েদের বার বার ডেকে আনেন উপজেলায়।
এধরনের নানান অভিযোগ এনে ২১ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা টি.আই (ভারপ্রাপ্ত) হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন দলনেত্রী দিপালী রাণী দাশ ও সাবেক ইউপি কমান্ডার আব্দুল মছব্বির। এছাড়াও তাদের এই অভিযোগের কপি ডাকযোগে রেজিস্ট্রারী করে সিলেট জেলা কমান্ডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে।
হারুনুর রশীদ নিয়মিত অফিসে আসেন না, উপজেলায় মিটিং থাকলে তিনি ঐ দিনই অফিসে আসেন বলে জানা যায়। উপজেলায় আর কোন কর্মকর্তা না থাকায় মাসের বেশিরভাগ সময় অফিস বন্ধ থাকে। এদিকে হারুনুর রশিদ অফিসে না এসে কানাইঘাটে তার পারিবারিক কাজে সময় দিয়ে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে সরকারের দেয়া ত্রাণ সহায়তায়ও করেছেন বেপক অনিয়ম। দরিদ্র আনসার সদস্যদের ত্রাণ না দিয়ে তিনি ১০০/২০০ টাকার বিনিময়ে ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দিপালী রাণী দাশ অভিযোগে উল্লেখ করেন হারুনুর রশিদ একজন লম্পট, চরিত্রহীন, দূর্নীতিবাজ ও অসৎ লোক। সে পূজা মন্ডপে আমাকে ডিউটি দিবে এর বিনিময়ে আমাকে তার অফিসের মধ্যে স্থাপিত ব্যক্তিগত রুমে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় এবং অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের কু-প্রস্তাব দেয়। আব্দুল মছব্বির পৃথক আরেকটি অভিযোগে উল্লেখ করেন, ৫ম উপজেলা নির্বাচনের ৩৯টি ভোট কেন্দ্রে আনসার মোতায়েন ছিল। সরকারের কাছ থেকে সেন্টার প্রতি ১২জন আনসারের জন ৩২ হাজার টাকা করে মোট ১২ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু তিনি প্রতিটি ভোট সেন্টারে ১২ জন আনসারের জায়গায় ৯ জন আনসার সদস্যের দ্বারা ডিউটি করিয়ে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বন্টন করেন। বাকি ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেন। উপজেলার ২৬ টি পূজা মন্ডপে পূজার সময় স্থানীয় প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের বাদ দিয়ে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সহ বিভিন্ন জায়গার বহিরাগত লোকদের দিয়ে ডিউটি করান। শুধু তাই নয় তিনি পূজার সময় চুক্তি ভিত্তিতে ১হাজার টাকায় শ্রমিক নিয়োগ করে থাকেন। কিন্তু এর বিপরীতে তিনি প্রতি আনসার সদস্যদের জন্য সরকারের কাছ থেকে ২৩৬০ টাকা উত্তোলন করে থাকেন। পূজা মন্ডপের ডিউটির সিসিতে ৪/৫ জনের নাম থাকলেও ডিউটি করেন ২/৩ জন। এ ছড়াও চুক্তি ভিত্তিতে পূজায় দল পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা টি.আই (ভারপ্রাপ্ত) হারুনুর রশীদ বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তাদের বয়সসীমা অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। এসব অভিযোগের কোন সত্যতা নাই। আর দিপালী রাণী দাশ যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য অসুস্থ থাকায় তাঁর সাথে কথা বলা যায়নি। তবে অফিস সহকারী আব্দুল মুক্তাদির আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র পেয়েছে বলে জানান।